শেরপুর সদর উপজেলার ধোপাঘাট এলাকায় পৈতৃক সম্পত্তি দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় মোঃ আব্দুর রশিদ (৫৮), পিতা-মৃত ছামাদ মন্ডল, সাং-ধোপাঘাট, শেরপুর সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বাদী ও বিবাদীপক্ষ একই এলাকায় বসবাস করেন। দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ও মামলা-মোকদ্দমা চলছে। বাদীর অভিযোগ, বিবাদী মোঃ আমির হামজা (৬০), মোঃ আইজল মিয়া (৫৭), মোঃ বাদশা মিয়া (৫৫) ও মোঃ সওদাগর (৪৫)— সবাই মৃত আছর আলীর পুত্র—তার পৈতৃক জমি বেদখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন।
বাদী জানান, গত ১১ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে তিনি জোত কসবা মৌজাস্থ জমিতে আগাছা পরিষ্কার করছিলেন। এসময় বিবাদীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সেখানে প্রবেশ করে তাকে বাধা দেয় এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। প্রতিবাদ করলে বিবাদীরা মারধরের চেষ্টা করে। পরে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বিবাদীরা প্রকাশ্যে হুমকি দেয়, “এই জমি আমরা যে করেই হোক বেদখল করব, বাধা দিলে খুন করব।”
অভিযোগে আরও বলা হয়, বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার স্থানীয় সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও বিবাদীপক্ষ সিদ্ধান্ত মানেনি। এতে বাদী ও তার পরিবারের সদস্যরা এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং যে কোনো মুহূর্তে সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি মোঃ শুকুর মাহমুদ জানান, তিনি উক্ত জমিতে প্রায় ৭৫ বছর ধরে দখল অবস্থায় আছেন এবং নিয়মিতভাবে সেখানে পাটসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করে আসছেন। তিনি বলেন, “কিছুদিন আগে পাট কাটার সময় প্রতিপক্ষ বাধা দেয়। বাধার সম্মুখে তারা চলে যায়। পরবর্তী ফসল তারা ঘরে নিয়ে যান। ঘটনার কিছুদিন পর পরবর্তীতে আমাদের বাড়িতেও হামলার চেষ্টা চালায়।”
তিনি আরও জানান, “আমাদের কাছে বৈধ কাগজপত্র রয়েছে এবং জমির বি.আর.এস রেকর্ডও আমাদের নামে। কিন্তু প্রতিপক্ষ রেকর্ড ভাঙার কথা বলে হয়রানি করছে। এখন আমার পরিবার ভয়ে দিন কাটাচ্ছে।”
স্থানীয়রা জানান, জমি দখল নিয়ে বিরোধের কারণে এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে শেরপুর সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আইনুন জানান, “অভিযোগটি হাতে পেয়েছি এবং সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তফসিল:
জেলা-শেরপুর, উপজেলা-শেরপুর সদর, মৌজা-জোত কসবা।
বিআরএস খতিয়ান নং-১৮-৩, দাগ নং-৮৬১, ৮৬২, ৮৬৩, ৮৬৬, ৮৮৪, ৮৮৫—মোট ৩ একর ১৫ শতাংশ জমি।
সিএস খতিয়ান নং-২৬, আরএস খতিয়ান নং-২৫, দাগ নং-৩৯৫—মোট ২ একর ১২ শতাংশ জমি।
সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন