আলহাজ জুট মিলের প্রধান ফটক
সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি \
জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌর এলাকার আলহাজ জুট মিল ৬ বছর ধরে বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছে বেকার হয়ে পড়া শ্রমিকরা। বকেয়া প্রায় দেড় কোটি টাকা বেতন-বোনাস ও পেনশনের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে ধর্ণা দিয়েও প্রতিকার মিলছে না। এদিকে মিলটি পুনরায় চালু ও বকেয়া পরিশোধের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শ্রমিকরা। রবিবার সকাল ১১টার দিকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সংলগ্ন দিগপাইত-সরিষাবাড়ী-ভুয়াপুর প্রধান সড়কে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আলহাজ জুট মিল শাখা এ মানববন্ধনের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীম। অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আজিম উদ্দিন আহমেদ, উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মনিরুজ্জামান আদম, সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ আলম তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল ইসলাম, আলহাজ জুট মিল শ্রমিক দলের সভাপতি বাবর আলী, সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম মিয়া প্রমুখ।
![]() |
মিলের অভ্যন্তর এভাবেই জঙ্গলে পরিণত হচ্ছে |
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সরিষাবাড়ী পৌরসভার মাইজবাড়ী এলাকায় ১৯৬৭ সালে আলহাজ জুট মিল স্থাপিত হয়। শুরু থেকেই এখানে পাটের তৈরি বস্তা, ব্যাগ, ও সুতা তৈরি হতো। দৈনিক উৎপাদন হতো প্রায় ১৫ মে. টন পণ্য। কারখানায় স্থায়ী, অস্থায়ী ও দৈনিক হাজিরাভিত্তিক প্রায় ৪ হাজার নারী-পুরুষ কর্মরত ছিলেন। কিন্তু ২০১৮ সালের ২০ জুলাই কর্তৃপক্ষ পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই কারখানা বন্ধ করে দেয়।
মিলের স্থায়ী শ্রমিক মিজানুর রহমান জানান, জুট মিল বন্ধ হওয়ার সময় শ্রমিকদের দুইমাসের বেতন ও দুটি বোনাসের প্রায় দেড় কোটি টাকা এবং ১৫১ জন শ্রমিকের দুই লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত পেনশনের টাকা বকেয়া রাখা হয়। শ্রমিকরা বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে বারবার ধর্ণা দিলেও কর্তৃপক্ষ কোনো প্রতিকার করছে না।
আলহাজ জুটমিল শ্রমিক দলের সভাপতি বাবর আলী ও সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান বুলবুল জানান, মিল বন্ধ হয়ে পড়ায় প্রায় ৪ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। এসব শ্রমিক সারাজীবন শুধু পাট কলের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় অন্য কোনো কাজ করতে পারেন না, নতুন কর্মসংস্থান না হওয়ায় তাদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।
![]() |
মিল চালুর দাবিতে শ্রমিক দলের মানববন্ধন |
জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীম বলেন, ইতোপূর্বে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতারা নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি না করে বেকারত্ব সমস্যা বাড়িয়েছেন। রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব, প্রশাসনিক দূর্বলতা ও সিবিএ নেতাদের যোগসাজশে আলহাজ জুট মিলটি বন্ধ হয়ে গেছে। মিলের মালপত্র দুষ্কৃতকারীরা চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে এবং মিলের জায়গাজমি আবাসিকভাবে বিক্রি করার পায়তারা চলছে। তিনি দ্রুত আলহাজ জুট মিল চালুসহ বকেয়া বেতন-বোনাস পরিশোধের দাবি করেন। অন্যথায় বৃহৎ আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন।
সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন