সুলতান আহমেদ ময়না, শেরপুর প্রতিনিধি।।
শেরপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে আদালতের দেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঘর দখল, বিদ্যুৎ সংযোগ ও বৃক্ষরোপণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আদালতে এবং সদর থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের হয়েছে।
বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, শেরপুর সদরে মোকদ্দমা নং-১৩০/২০২৫ (দলিল বাতিল) এ ধোপাঘাট এলাকার মৃত শামছুল হকের পুত্র মোঃ সহিদুর রহমান বাদী হয়ে কসবা কাচারীপাড়ার ইয়ানুছ আলীর পুত্র মোঃ শফিকুল ইসলামকে বিবাদী করেন। আদালত ০১ জুন ২০২৫ তারিখে উক্ত জমিতে দখল বা পরিবর্তন না করার নির্দেশ দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, বিবাদীপক্ষ আদালতের আদেশ অমান্য করে ১৫ জুন ২০২৫ তারিখে ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে নালিশী ভূমিতে প্রবেশ করেন। সেখানে বাদীর টিনশেড ঘর নিজের বলে দাবি করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেন এবং ফলজ ও বনজ বৃক্ষরোপণ শুরু করেন। পরবর্তী আইনের ভয়ে তা সরিয়ে নিয়ে যায়। এ নিয়ে বাদী অবমাননার মামলা (নং-১৫/২০২৫ ভায়োলেশন) দায়ের করেন।
পরে গত ১১ আগস্ট শেরপুর সদর থানায় একই ঘটনার ওপর আরও একটি মামলা (মোকদ্দমা নং-১৬) মোঃ ইউনুস আলী বাদী হয়ে দায়ের করেন। অভিযোগ করা হয়, বিবাদীপক্ষ অনধিকার প্রবেশ, হত্যাচেষ্টা, মারধর, ক্ষতিসাধন ও চুরির মতো ঘটনা ঘটিয়েছে।
তবে সরজমিন তদন্তে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তারা কোনো মারধর, ভাঙচুর বা ডাক-চিৎকার শুনেননি। দলিল বিশ্লেষণেও দেখা যায়—অভিযুক্তরা (শাবানা গং) তাদের ভাই হাবিবুর রহমানের কাছ থেকে হেবা ঘোষণার দলিল (নং-৬০৩৩, তারিখ: ১৪/০৮/২০২৪) গ্রহণ করেন, যা অভিযোগকারীর দলিল (নং-৬৯১৮, তারিখ: ১৭/০৯/২০২৪) এর আগে সম্পাদিত।
এছাড়া শফিকুল ইসলামের দলিলে চৌহদ্দির বিবরণে দাগ নম্বর ৫৫২৭-এর বাইরে লাল চিহ্নিত স্থান উল্লেখ করা হয়েছে, যা প্রকৃত জমির বাইরে অন্য জায়গায়। অপরদিকে শাবানা গংদের দলিলে শহীদের জমির সঠিক বিবরণ এবং লাল চিহ্নিত স্থান মিলে যায়। ফলে জমিটি তাদের স্বত্ব-দখলীয় বলেই প্রতীয়মান হয়।
পরবর্তীতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেরপুর সদর ইশতিয়াক মজনুন ইশতি ১৭ আগস্ট ২০২৫ তারিখে একটি প্রতিবেদন দেন, যেখানে উক্ত জমি শাবানা গং দের -দখলীয় বলে নিশ্চিত করা হয়। ভুক্তভোগীদের দাবি, আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্যের দায় এড়াতে বিবাদীপক্ষের ইউনুস আলী নিজেকে বাদী দেখিয়ে তার স্ত্রী রহিমা বেগমকে মাথায় আঘাত করে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার নাটক সাজান এবং থানায় মামলা করেন। এ মামলায় এক সরকারি চাকরিজীবী ও এক নাবালকের নামও আসামি করা হয়।
মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন। জমির মালিকানা ও দখল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আইনি লড়াই অব্যাহত রয়েছে।
সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন