সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি ।।
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দিতে অবস্থিত যমুনা সার কারখানা বন্ধ রয়েছে ২০ মাস ধরে। এতে করে চলতি ভরা আমন মওসুমে ইউরিয়া সার সংকটের আশঙ্কায় পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। অন্যদিকে কাজ বন্ধ থাকায় দৈনিক হাজিরাভিত্তিক প্রায় ৩ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। ফলে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের। এদিকে কারখানা চালুর দাবিতে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকালে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বিসিআইসির চেয়ারম্যানের আগমন উপলক্ষে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে রাজনৈতিক নেতাকর্মী, ডিলার, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করেন।কারখানা সূত্র জানায়, ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত যমুনা সার কারখানা উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলাসহ প্রায় ২০টি জেলার ইউরিয়া সারের চাহিদা পূরণ করে আসছিল। এটি দেশের একমাত্র দানাদার ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। নরসিংদীর ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা চালুর আগে এটিই ছিল দেশের সর্ববৃহৎ সার কারখানা। শুরুতে দৈনিক ১ হাজার ৭০০ মে. টন সার উৎপাদনে সক্ষম হলেও গ্যাসের চাপ ৪২-৪৩ পিএসআই থেকে ধীরে ধীরে সর্বশেষ অর্ধেকে নেমে আসে। কিছুদিন পর পর গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় উৎপাদন বন্ধ থাকে বছরের প্রায় অর্ধেক সময় ধরে। এরইমধ্যে দু-এক বছর পর পর ওভারহোলিংয়ের নামে ব্যয় হয় শত শত কোটি টাকা। কারখানার উৎপাদন বন্ধ এবং সরকার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও পুরোদমে চালু থাকে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। অপরদিকে ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস ট্রান্সমিশন অ্যাণ্ড কোম্পানি কারখানায় গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেয়। ফলে যমুনা সার কারখানায় পুরোপুরি উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে, বিসিআইসি'র অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত ও প্রভাবশালী অসাধু সিন্ডিকেটের যোগসাজশে যমুনা সার কারখানার গ্যাস বন্ধ করে ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানায় গ্যাসের চাপ বৃদ্ধি করা হয়।
কারখানার নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, লাভজনক এ প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ ২০ মাস ধরে বন্ধ থাকায় প্রতিদিন সাড়ে ৩ কোটি টাকা হারে লোকসান হয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। পাশাপাশি মূল্যবান যন্ত্রাংশ অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকায় মরিচা ধরে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। পুনরায় এগুলো সচল করে উৎপাদনে যেতে কর্তৃপক্ষের গুণতে হবে বাড়তি টাকা। এদিকে শুক্রবার কারখানা পরিদর্শনে ঢুকেন বাংলাদেশ রাসায়নিক ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) চেয়ারম্যান মো. ফজলুর রহমান। তাঁর আগমন উপলক্ষে স্থানীয়রা মানববন্ধন করে।
এব্যাপারে যমুনা সার কারখানার ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন মুঠোফোনে বলেন, চেয়ারম্যান মহোদয় কারখানা পরিদর্শন করে গেছেন। অক্টোবর মাসের মাঝামাঝিতে গ্যাস সংযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কারখানা চালু হওয়ার উপযোগী রয়েছে, গ্যাস পেলেই উৎপাদন শুরু হবে।
সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন