ছাইদুর রহমান \
জামালপুর সদর উপজেলার নরুন্দি ইউনিয়নের তারাগঞ্জ বাজার এলাকায় অঞ্জনা বেগম (২৭) নামে তিন সন্তানের জননীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। অঞ্জনার স্বামী সোলাইমান, শশুর আক্তার হোসেনসহ পরিবারের লোকজন অঞ্জনাকে গলাটিপে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন অঞ্জনার বাবা নজরুল ইসলাম। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর মরদেহ উদ্ধার এবং ময়না তদন্তের জন্য জামালপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ২৬আগস্ট দিবাগত রাতের কোনো এক সময় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ অঞ্জনার স্বামী সোলাইমানকে আটক করেছে। তবে অঞ্জনার শশুর ট্রাক চালক আক্তার হোসেন পলাতক রয়েছে। বুধবার ২৭ আগস্ট সকালে এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে ভীড় করেন। এবং ঘটনাস্থলে ছুটে যান নিহতের বাবা মাসহ এলাকার লোকজন। তারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। নিহত অঞ্জনার বাড়ি জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের অনন্তবাড়ি গ্রামে। সে ওই গ্রামের দরিদ্র মাছ বিক্রেতা নজরুল ইসলামের মেয়ে।
জানা গেছে, গত ১০ বছর আগে অঞ্জনার সাথে বিয়ে হয় তারাগঞ্জ বাজার এলাকার ট্রাক চালক আক্তার হোসেনের ছেলে সোলাইমানের সাথে। বিয়ের পর তাদের তিনটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। এর মধ্যে গত দুই মাস আগে তিনপুত্রের মধ্যে একজন পানিতে ডুবে মারা যায়। অঞ্জনার স্বামীও ট্রাক চালক। পেশাগত কারণে সে প্রায়ই বাড়ীর বাইরে থাকতেন। মঙ্গলবার তিনি নিজ বাড়ীতে আসেন। অঞ্জনার বাবা নজরুল ইসলাম অভিযোগ করে সাংবাদিকদের জানান, আমার মেয়েকে জামাই সোলাইমান ও তার শশুর আক্তার হোসেন গংরা মিলে স্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। আমি মেয়ে হত্যার বিচার চাই। তাদের ফাঁসি চাই।
অঞ্জনার ছোটবোন রুবি জানান, আমার বোনের সাথে অঞ্জনার স্বামী, শশুর, শাশুরি মধ্যে ঝগড়া বিরোধ ও মনোমালিন্য ছিল। এ নিয়ে তারা আমার বোনকে ইতিপূর্বে নানাভাবে নির্যাতন করতো। আমার বোন তিনটি সন্তানের মুখে দিকে তাকিয়ে সকল নির্যাতন সহ্য করেও সংসারে টিকে ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমার বোন অঞ্জনাকে স্বাসরোধ করে হত্যা করেই ছাড়লো ওরা।
এদিকে নিহত অঞ্জনার বাবা নজরুল ইসলামসহ এলাকাবাসীর অনেকেই জানান, নিহত অঞ্জনার স্বামী একজন নারী লোভী। ইতিপূর্বে অন্য মেয়ের সাথে তার পরকিয়ার সম্পর্ক রয়েছে। পরকিয়ার কারণে ওই নারীর সাথে সোলাইমানের অবৈধ মেলামেলা রয়েছে। এনিয়ে ইতিপূর্বে দরবার শালিস হয়েছে। পরকিয়ার ঘটনার কারণে স্ত্রী অঞ্জনাকে স্বাসরোধে হত্যা করে থাকতে পারে বলে মনে করছেন তারা। অপরদিকে, অঞ্জনাকে স্বাসরোধে হত্যা করার কথা অস্বীকার করেছেন ট্রাক চালক স্বামী সোলাইমান হোসেন। জামালপুর সদর থানার নরুন্দি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি সবিজ হোসেন জানান, লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য জামালপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এদিকে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এ ঘটনায় জামালপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হবে। আর সে ভাবেই আমরা এগুচ্ছি।
সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন