উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জাহিদুল ইসলামের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ১০৮নং হাসিল গৌরিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ আলী আছাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বদলে যাচ্ছে বিদ্যালয়ের সার্বিক চিত্র ও শিক্ষার গুণগত মান। ১০৮নং হাসিল গৌরিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আলী আছাদ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নয়, জীবনে চলার প্রয়োজনীয় সব জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ দিয়ে শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। বিদ্যালয়টিকে শতভাগ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিনত করতে চেষ্টা চালাচ্ছেন। ইতিমধ্যে তিনি বিদ্যালয়টিকে একটি আধুনিক ও আনন্দময় বিদ্যাপীঠে পরিনত করেছেন। আলী আছাদ শুধু বিদ্যালয়ের অবকাঠামোর উন্নয়ন করেননি, সেই সাথে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান পদ্ধতিতেও পরিবর্তন এনেছেন। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা এখন অন্যদের জন্য অনুকরণীয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১০৮নং হাসিল গৌরিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৬৯ খ্রি. ১০৮নং হাসিল গৌরিপুর বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে নবযাত্রা শুরু করে। হাসিল গৌরিপুর মৌজার ৫১ শতাংশ জমিতে প্রতিষ্ঠিত হয় এ বিদ্যালয়টি। সে সময় হাসিল গৌরিপুর এলাকার শিক্ষা অনুরাগী আলহাজ্ব বছির উদ্দিন এককভাবে ৪৫ শতাংশ জমি, হাবিবুর রহমান, শাহেদ আলী ও নায়েব আলী ৩জন যৌথভাবে ৬ শতাংশ জমি উক্ত বিদ্যালয়ের নামে দান করেন। সেই দানকৃত সর্বমোট ৫১ শতাংশ জমিতে একটি টিন শেড ঘর উত্তোলন করে ৩ কক্ষ বিশিষ্ট টিন শেড ঘরে শুরু হয় পাঠদানের কার্যক্রম। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠাকালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন ১নং কেন্দুয়া ইউনিয়নের কালিবাড়ী এলাকার সনামধন্য শিক্ষক রায়হান আলী। হাটি হাটি পা পা করে চলতে থাকে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকা অবস্থায় বিগত ০১-০১-১৯৭৩ সালে ১০৮নং হাসিল গৌরিপুর বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি সরকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এভাবেই চলতে থাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। এরপর বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষক হিসেবে বিগত ৩১ মার্চ ২০১৫ খ্রি. যোগদান করেন কাউছার জাহান ফারজানা। তার সময়ে বিদ্যালয়টিতে তেমন কোন উন্নয়ন না হতেই তিনি বিগত ৭ অক্টোবর ২০২০ খ্রি. ১০৮ নং হাসিল গৌরিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বদলি হয় অন্য একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তিনি বদলি হওয়ার পর ১০৮ নং হাসিল গৌরিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন ১৩নং মেষ্টা ইউনিয়নের হাজীপুর বাজার এলাকার কৃতিসন্তান মেধাবি শিক্ষক আলী আছাদ। তিনি যোগদানের সময় বিদ্যালয়টির সার্বিক পরিবেশ ও শিক্ষার মান ছিলো খুবই খারাপ। জরাজীর্ণ পুরাতন ভবনে ৭৮জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে ২ শিফটে চলতে থাকে পাঠদান কার্যক্রম। বিদ্যালয়ে খেলার মাঠে শিক্ষার্থীরা পানি জমে থাকার কারণে খেলাধুলা করতে পারতোনা। বিদ্যালয়টির নিকটেই স্থানীয় প্রভাবশালী ২জন ব্যক্তি গড়ে তুলে ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঐ ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কারণে আস্তে আস্তে ১০৮ নং হাসিল গৌরিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কমতে থাকে। স্থানীয় প্রভাবশালী ২জন ব্যক্তি গড়ে তুলে ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার্থীদের বাবা-মাকে বিভিন্ন প্রকার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করে নিতেন। আলী আছাদ ১০৮ নং হাসিল গৌরিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করার পর বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এলাকায় শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবককে বুঝিয়ে শিক্ষার্থী সংগ্রহ করতে থাকে। আস্তে আস্তে বৃদ্ধি হতে থাকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এখন বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে সর্বমোট শিক্ষার্থীর পরিমান ১৪১ জন। প্রধান শিক্ষকসহ ৮ জন শিক্ষক নিয়ে নিয়মিতভাবে ১৪১ জন শিক্ষার্থীকে এক শিফটে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ১৩নং মেষ্টা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান একে আজাদ মুক্তা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা দৈনিক সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন পত্রিকার এ প্রতিবেদককে জানান, আলী আছাদ সাহেব আমাদের বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিদ্যালয়ের সার্বিক চিত্র ও শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করেছে। তার এই উদ্যোগের ফলে বিদ্যালয়টি এখন জামালপুর সদরে রোল মডেল হিসেবে পরিচিত। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা এখন অন্যদের জন্য অনুকরণীয়। মোঃ আলী আছাদ প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করেন এবং সেগুলো সমাধানের জন্য দিনরাত কাজ শুরু করেন। সরকারী ও স্থানীয়দের অনুদানে তিনি প্রথমে বিদ্যালয়ের অবকাঠামোর উন্নয়ন করেন। পুরাতন ও জরাজীর্ণ দেয়ালগুলো মেরামত করে নতুন রুপে সাজানো হয়। বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষগুলোকে মনোরম করে তুলার জন্য দেয়াল চিত্রাঙ্কন করা হয় এবং প্রতিটি শ্রেণী কক্ষে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের ব্যবস্থা শুরু করেছে। ইতিমধ্যে শিশু শ্রেণী ও প্রথম শ্রেণীতে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করেছেন। শিক্ষাদান পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সর্ম্পক তৈরি হয়েছে। শিক্ষকরা এখন পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষণীয় উপকরণ ব্যবহার করে পাঠদান করেন। শিক্ষার্থীরাও আনন্দের সাথে পড়াশোনা করছে। খেলাধুলার প্রতিও মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে, যার ফলে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটছে। বিদ্যালয়ের এই পরিবর্তন শুধু শিক্ষার্থী বা শিক্ষকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, পুরো এলাকার মানুষের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। অভিভাবকরা এখন তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে আগ্রহী হচ্ছেন। এলাকার শিক্ষানুরাগীরাও এই বিদ্যালয়েটিকে সহযোগিতা করেছেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জাহিদুল ইসলামের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ১০৮নং হাসিল গৌরিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ আলী আছাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বদলে যাচ্ছে বিদ্যালয়ের সার্বিক চিত্র ও শিক্ষার গুণগত মান
শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২৫
0


সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন