সীমান্ত দিয়ে পুশইন করতে হলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের ও ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে পুশইন করুন --------- শেরপুরে নাহিদ ইসলাম

দৈনিক সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন
0

সুলতান আহমেদ ময়না, শেরপুর প্রতিনিধি ।।

আজ ২৭ জুলাই শেরপুর জেলায় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দেশব্যাপী কেন্দ্রীয় কর্মসূচি উপলক্ষে জেলা শহরের শহীদ স্কয়ার থানা মোড় মুক্তমঞ্চে পদযাত্রায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, কোটা আন্দোলন থেকে গণঅভ্যুত্থান যার মাধ্যমে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা দেশ থেকে দিল্লিতে পালিয়েছে। সেই দিল্লিতে বসে রয়েছে শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের হাজারো সন্ত্রাসীকে দিল্লি আশ্রয় দিয়েছে। আর এই সীমান্ত দিয়ে প্রতিনিয়ত পুশইন হচ্ছে, জনগণকে ধেঁাকা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা এই পুশইনের বিরোধিতা করেছি। আমরা ভারত সরকারকে বলেছি, সীমান্তে কোন হত্যাকাণ্ড মেনে নেবো না, সীমান্তে আমরা কোন পুশইন মেনে নেবো না। পুশইন করতে হলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের পুশইন করুন, শেখ হাসিনাকে পুশইন করুন। আমরা বিচারের মাধ্যমে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগকে কাঠগড়ায় দঁাড় করাবো।
রোববার (২৭ জুলাই) বিকেলে দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচির অংশ হিসেবে শেরপুর শহরের থানার মোড়ে এনসিপির আয়োজিত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছরের মধ্যেও আমরা দৃশ্যমান কোন বিচার দেখিনি। আওয়ামী লীগের দোসররা বিভিন্ন জায়গায় রয়ে গিয়েছে। প্রশাসনে ঘাপটি মেরে রয়েছে। আমরা গোপালগঞ্জে দেখেছি কিভাবে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করেছিল। আমরা পরিস্কারভাবে বলেছি, গোপালগঞ্জসহ সারা বাংলাদেশে মুজিববাদকে আমরা দঁাড়াতে দিবো না। যারা এখনো প্রশাসনসহ পুলিশে আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে কাজ করছেন, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের প্রশয় দিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আমাদের দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শেরপুরে হাসপাতাল থাকলেও চিকিৎসাসেবা নাই, শিক্ষা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নাই, কর্মসংস্থান নাই। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বিগত আমলে শাসন করলেও শেরপুরে উন্নয়ন নাই। উন্নয়ন পেয়েছে শুধু আওয়ামী লীগের দোসররা, সন্ত্রাসীরা। যারা দেশের টাকা লুট বিদেশে পলাতক অবস্থায় আছে।
পথসভায় উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, বিগত সময়ে বাংলাদেশের প্রতিটা সিস্টেম কিছু ধান্দাবাজ, বাটপার, ব্যক্তি স্বার্থকে প্রধান্য দেওয়া হয়েছিল। যার কারণে কুলসিত হয়েছিল। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময় গিয়েছে সেই লোকদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অতঃপর কালপিটরা আবারো সেই সিস্টেমগুলোকে নতুন করে জেঁকে বসেছে।
দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিতে আমরা শ্লোগান দেইনা ‘নেতা তোমার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’। একটা বিপদ আসলে বুঝা যায় কয়জন রাজপথে থাকে। ভালো সময় থাকলে কর্মীর অভাব হয়না। কিন্তু সংকটের সময় যারা রাজপথে থাকে তারা প্রকৃত কর্মী। আমার হাজার হাজার লাখো লাখো কর্মীর দরকার নাই। যারা সংকটকে মোকাবিলা করবে এই কর্মীগুলো আমার প্রয়োজন। আর এই কর্মীগুলোকে নিয়েই আমরা রাজনৈতি করতে এসেছি। আপনারা নেতার সাথে কেউ সেলফি তুলে ফেসবুকে দিয়ে নেতা হওয়ার দরকার নেই। নেতার পিছনে না ঘুরে যোগ্যতা অনুযায়ী নিজে নেতা হোন। আমরা খবর পেয়েছি, গতকাল আমাদেরই এক সহকর্মী চঁাদাবাজি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে। আমি বলতে চাই, যে দলেরই চঁাদাবাজ হোক না কেনো তাকে থানায় দিবেন। আর আমার দলের কেউ চঁাদাবাজি করলে আগে আপ্যায়ন করবেন পরে থানায় দিবেন।
সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সামান্তা শারমীন বলেন, গত কয়েকদিন আগে ঢাকার মাইলস্টোন কলেজে যেই শিশুরা অগ্নিদগ্ধ হয়েছে এবং মৃত্যুবরণ করেছে তাদের চেয়েও দগ্ধ মন নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। আমরা লক্ষ্য করছি, এই ঘটনার তদন্তভার অগ্রগতি হচ্ছে না। আমরা পরিস্কার করে জানতে চাই, এই মাইলস্টোনের ঘটনার পেছনে কার কার হাত আছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সামান্তা শারমীনসহ জেলা-উপজেলার নেতাকর্মীরা।
পথসভার আগে, শহরের শহীদ মাহবুব চত্বর থেকে জুলাই পদযাত্রা শুরু হয়। এতে যোগ দেন এনসিপির নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
শেরপুরে জুলাই পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন এনসিপি'র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম,সদস্য সচিব আখতার হোসেন,সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, সামান্তা শারমিন, তাসনিম জারা, লুৎফর রহমান, রফিকুল ইসলাম আইনী সহ শেরপুর জেলা নাগরিক পার্টির আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার লিখন মাহমুদ, শেরপুর জেলা পাঁচটি উপজেলা ও থানার নেতৃবৃন্দ, আরো উপস্থিত ছিলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক মামুনুর রহমান মামুন,কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতৃবৃন্দ।
এনসিপির জুলাই এ পদযাত্রা উপলক্ষে শেরপুর জেলায় ছিল চোখে পড়ার মতো নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শেরপুর জেলা পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন আরে দেশব্যাপী এনসিপির জুলাই পথযাত্রায় বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনার কারণে শেরপুর জেলায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পদযাত্রা শেষে তিনি শেরপুর জেলা পুলিশসহ নিরাপত্তায় থাকা সকল সদস্যের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)