শেরপুর শহরের বাগরাকসা পূর্বপাড়া বস্তি এলাকায় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ২০০টি অসহায় পরিবার—যাদের মধ্যে রয়েছে প্রতিবন্ধী, গর্ভবতী নারী ও অসুস্থ বৃদ্ধ পিতা-মাতা—বছরের পর বছর ধরে গড়ে তোলা ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন এক বাটোয়ারা মামলার রায়ের পর।
প্রায় ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে বসবাসকারী এই পরিবারগুলোর জীবনে নেমে এসেছে চরম অনিশ্চয়তা। এলাকাজুড়ে কান্না আর আহাজারিতে সৃষ্টি হয়েছে বেদনাদায়ক পরিবেশ। মামলাটি (নং ৪১৫/২৩) ছিল একটি বাটোয়ারা মামলা, যার বাদী ছিলেন মোঃ আব্বাস আলীসহ ১৫ জন এবং বিবাদী ছিলেন মোঃ দিল মাহমুদ ওরফে ফকিরসহ আরও ১৫ জন।
বিবাদীদের পক্ষ থেকে জানা যায়, মামলায় সঠিক আইনি পরামর্শ না পাওয়ার কারণে তারা পরাজিত হন। অনেক বাসিন্দার নাম মামলায় বিবাদী হিসেবেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এর মধ্যে আব্দুস সালাম, শাহীন ও ইসরাফিল নামের তিনজন বৈধ দলিল, খারিজ ও খাজনা পরিশোধ করে বছর ধরে ঐ ভূমিতে বসবাস করলেও তারাও উচ্ছেদের মুখে পড়েছেন। এখানে তদন্ত কমিশন টিমও ভালো কাজ করেননি সঠিক বিষয় তুলে ধরেননি বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা ভুক্তভোগীরা এ অজান যে একজন সনদ হীন অপরিপক্ক কমিশন দিয়ে জমিটি তদন্ত করিয়েছেন আর তার জন্যই তারা আজ গৃহহারা হয়েছেন অসহায় হয়ে খোলা ছাদে দিন কাটাচ্ছেন। এটা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সমাধান হওয়া সম্ভব।
স্থানীয়রা জানান, এই বাটোয়ারা মামলায় জমির সিএস ও আরআর খতিয়ান অনুযায়ী প্রায় ২৭ শতাংশ জমির ওপর দাবি করা হলেও আদালতের রায়ে মাত্র সাড়ে ১৩ শতাংশ জমির ডিগ্রি দেওয়া হয়েছে। তবুও পুরো এলাকাজুড়ে উচ্ছেদের প্রভাব পড়েছে।
এ অবস্থায় এলাকাবাসীরা শেরপুর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা আইনজীবী সমিতির নিকট জমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের আবেদন জানিয়েছেন। স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেছেন, তাদের পরিবার প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই ভূমিতে বসবাস করছে এবং যথাযথ কাগজপত্রও তাদের কাছে রয়েছে।
তাদের একমাত্র দাবি—সরকারি প্রশাসনের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে যেন সঠিক যাচাই-বাছাই করে ভূমি সংক্রান্ত জটিলতার শান্তিপূর্ণ সমাধান করা হয়।
বাগরাকসা এলাকার এই বেদনাদায়ক বাস্তবতা এখন পুরো শেরপুর শহরের মানুষের আলোচ্য বিষয়।


সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন