জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার বাট্টাজোর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের গোয়ালগাঁও থেকে ফজিলত পাড়া পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা সড়ক দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। উজ্জ্বল ব্রিকস ফিল থেকে শুরু করে ফকির আলীর বাড়ি পর্যন্ত সড়কটির প্রতিটি ইঞ্চি এখন খানা-খন্দে ভরা। বর্ষা মৌসুমে পুরো রাস্তা কাদা-পানিতে একাকার হয়ে পড়ে। বছরের পর বছর অবহেলিত অবস্থায় পড়ে থাকা এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি এখন আশপাশের পাঁচটি গ্রামের মানুষের জন্য দুর্ভোগের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জানা যায়, এই রাস্তা দিয়ে গোয়ালগাঁও, ফজিলত পাড়া, কদমতলা, পূর্ববাট্টাজোর এবং খোর্দ্দবাট্টাজোর গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন। শিক্ষার্থী, কৃষক, কর্মজীবী মানুষ ও ব্যবসায়ীরা নিয়মিত এই সড়ক ব্যবহার করেন। অথচ বছরের বেশিরভাগ সময়ই রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী থাকে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে অবস্থাটি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
ফজিলত পাড়ার কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, "এই রাস্তা দিয়েই আমরা প্রতিদিন সবজি বাজারে নিয়ে যাই। কিন্তু বৃষ্টির সময় ট্রলি, ভ্যান, রিকশা, এমনকি অটোরিকশাও চলতে পারে না। তখন সবজি ঘরে পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যায়। লোকসান ছাড়া উপায় থাকে না।"
স্থানীয় মাদ্রাসাছাত্র রাব্বি জানায়, "বর্ষায় কাদায় হাঁটা তো দূরের কথা, পা ফেলার জায়গা থাকে না। স্কুলে যেতে পারি না, অনেক সময় পরীক্ষাও মিস করি।"
গৃহবধূ ময়না বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে হয় কাঁধে করে। গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা, পায়ে হাঁটাও যায় না। রাত হলে বিপদ আরও বাড়ে। এটা কি আমাদের মানবাধিকার না?"
স্থানীয়দের অভিযোগ, বহু বছর ধরে রাস্তাটি কাঁচা অবস্থায় পড়ে থাকলেও কোনো ধরনের দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। বিভিন্ন সময় নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে আর কেউ খোঁজ নেয়নি। দাবি জানানো হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কিংবা প্রকৌশল বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
স্থানীয় সমাজকর্মী ও শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, "দুই কিলোমিটার রাস্তায় যেন জনগণের কষ্ট আটকে আছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, ব্যবসা—সবক্ষেত্রেই এই কাঁচা রাস্তা একটা বড় প্রতিবন্ধকতা। অথচ এটি পাকাকরণে তেমন কোনো বিশাল প্রকল্প দরকার নেই। প্রয়োজন শুধু সদিচ্ছা ও অগ্রাধিকার।"
এলাকাবাসী ও স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, অবিলম্বে রাস্তাটির উন্নয়ন কাজ শুরু করতে হবে। এই সড়কটি শুধু একটি গ্রামের পথ নয়, এটি পাঁচ গ্রামের মানুষকে শহরের সঙ্গে সংযোগকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। অবহেলা করলে ভোগান্তির মাত্রা আরও বাড়বে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী শামসুল হক বলেন, "সামনে কোন বরাদ্দে আসলে সবার আগে এই সড়কটিত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করা হবে।
সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন